সে যে কতকাল আগের কথা কার বাবার সাধ্য বলে। হিন্দুরা যাকে ‘সত্যযুগ’ বলে সম্ভবত সেই যুগেরও বহু আগে, আকাশ, পৃথিবী আর পাতাল প্রধানত এই তিন লোকে বিভক্ত ছিল বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। উপরে আকাশে থাকত দেবতারা, মনুষ্যেরা থাকত পৃথিবীতে আর দানবেরা থাকত পাতালে। আকাশের বিভিন্ন জায়গায় ছিল বিভিন্ন লোক: ব্রহ্মলোক, শিবলোক, বিষ্ণুলোক। এই তিন লোকে হিন্দুদের তিন প্রধান দেবতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু আর শিব থাকতেন। ব্রহ্মা সৃষ্টিকর্তা, বিষ্ণু পালনকর্তা আর শিব সংহারকর্তা।
আকাশে স্বর্গ বলে একটা জায়গা ছিল যেখানে দেবতারা থাকতেন। স্বর্গের রাজা ছিলেন ইন্দ্র। দেবতাদের বিশেষ কোনো কাজ ছিল বলে মনে হয় না। স্বর্গে না ছিল কোনো ফ্যাক্টরী, না ছিল কৃষিকাজ। সম্ভবত কোনো স্বর্গীয় ভাতার ব্যবস্থা ছিল কানাডা বা নরওয়ের মতো কিছু কিছু কল্যাণ রাষ্ট্রে যেমনটি আছে। ভরত মুনির রচনা করা নিত্য নতুন নৃত্যনাট্য দেখে দেবতাদের মহা আনন্দে দিন কেটে যেত। নৃত্যনাট্যে অংশ নিতেন উর্বশী, মেনকা, রম্ভার মতো অনন্তযৌবনা অপ্সরারা। চাহিবামাত্র এই অপ্সরারা দেবতাদের আসঙ্গ-লিপ্সা মেটাতে বাধ্য থাকতেন।
আকাশে দেবতারা ছাড়াও থাকত যক্ষ আর গন্ধর্বের দল। গন্ধর্বেরা স্বর্গের গীতবাদ্যে অংশ নিত। দানব, যক্ষ আর গন্ধর্বদের ক্ষমতা মানুষের চেয়ে বেশি ছিল। যেমন ধরুন, তারা আকাশে উড়তে পারত, যখন খুশি আকাশ থেকে পৃথিবীতে নেমেও আসতে পারত। এর পরেও মানুষেরাই দেবতাদের কাছে বেশি প্রিয় ছিলেন। এর কারণ কি জানা মুস্কিল, তবে একটা কারণ হতে পারে এই যে মানুষেরা দেবতাদের ক্ষমতাকে কখনো চ্যালেঞ্জ তো করতই না, বরং পূজা-যজ্ঞ-ব্রত করে দেবতাদের তারা মহা সম্মান করত। প্রশংসা-স্তুতি কে না চায় বলুন! বাঙালি নেতা ও নেত্রীরা যেমন চান যে আপনি তাদের কথা বিনা প্রশ্নে মেনে নেবেন, কারণে-অকারণে তাদের তৈলসিক্ত করবেন, সেকালের দেবতারাও সে রকম কিছুই চাইতেন, বা এখনও চান। বাঙালি নেতাদের মতো দেবতাদেরও চামচামীতে অরুচি ছিল না। প্রশংসার তৈল দেবতাদের কোনো ক্ষতি করতে পারত না, কারণ যেহেতু মানুষের মতো হৃদয় ছিল না দেবতাদের সেহেতু রক্তে কোলস্টেরল জমে হার্টএ্যাটাক হবার মতো কোনো বিপদের আশঙ্কা তাঁদের ছিল না।
যে কোনো কারণেই হোক, দানবেরা মানুষ্যদের মতো অত মোলায়েম ছিল না। তারা সুযোগ পেলেই দেবতাদের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে বসত। তাদের সেই ক্ষমতাও অবশ্য ছিল। ক্ষমতা অর্জনের জন্যে দানবেরা ব্রহ্মা বা শিবের ধ্যান করত। অসুরদের ধ্যানে গলে গিয়ে মাঝে মাঝেই ব্রহ্মা বা শিব হুট করে তাদের অমরত্বের বর দিয়ে বসতেন। অসুরের ধ্যানও অবশ্য যেমন তেমন কাজ নয়। যাকে যোগব্যায়ামে শীর্ষাসন বলে সেই শীর্ষাসনে অর্থাৎ মাথা মাটিতে রেখে পা উপরের দিকে দিয়ে বছরের পর বছর উল্টো হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে স্তুতি করলে বর না দিয়েই বা ব্রহ্মা পারবেন কেন! ব্রহ্মা বলে কি তিনি মানুষ নন?
এভাবে দেবতা-দানবের টম এ্যান্ড জেরির খেলা ভালোই চলছিল। কিন্তু ব্রহ্মা একবার মহিষাসুর নামে এক দানবকে কঠিন এক বর দিয়ে বসলেন: কোনো দেবতা, যক্ষ, দানব বা মানুষের পক্ষে তাকে যুদ্ধে জয় বা হত্যা করা সম্ভব হবে না। অমরত্বের বর পেয়ে সেই অসুর স্বর্গ আক্রমণ করে বিনা আয়াসে দেবতাদের পরাজিত করলো। স্বর্গের অলস জীবনে অভ্যস্ত দেবতারা যুদ্ধে হেরে গিয়ে বাধ্য হলেন স্বর্গ ছেড়ে পালাতে। স্বর্গ দখল করে অসুরেরা স্বর্গে আসুরিক জরুরী আইন জারি করলো। কোনো কারণে যেসব দেবতা স্বর্গ ছেড়ে যেতে পারলেন না তাদের কষ্টের সীমা রইল না। যেমন দেবগুরু বৃহস্পতি, তিনি অসুরদের ছেলেমেয়েদের বিনা মাইনেতে পড়াতে বাধ্য হলেন। পবনকে সার্বক্ষণিক দখিনা বাতাসের ব্যবস্থা করতে বলা হলো। সূর্য আর চন্দ্র এই দুই বেচারা দেবতার তো কোত্থাও যাবার উপায় ছিল না। মহাকর্ষেও অমোঘ বাঁধনে তাঁরা বাঁধা। কিন্তু তাদের ডিউটি দিতে হলো অসুরেরা যেমনটি চায় ঠিক তেমন করে। সারা বছর পূর্ণিমা, সারা দিন হেমন্তকালের সকাল বেলার মতো মিষ্টি রোদ, সন্ধ্যার পরেও বেশ কিছুক্ষণ আকাশে থাকা…। এমনও হতে পারে যে রাত দুইটায়ও সূর্যদেবকে ঘোড়া ছুটিয়ে ডিউটি করতে হত, বা দিনের বারোটায়ও চন্দ্রদেবকে ঘরের খেয়ে আকাশের মেঘ তাড়িয়ে বেড়াতে হত।
বাকি দেবতারা ছদ্মবেশে পৃথিবীতে ফ্যা ফ্যা করে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন এদিক ওদিক যতদিন না ইন্দ্র তিন প্রধান দেবতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু আর শিবকে পাকড়াও করে নিজেদের দুরবস্থার বর্ণনা দিলেন। ব্রহ্মা স্বীকার করলেন যে কাজটা তিনি ঠিক করেননি, তবে এই বিপদ থেকে উদ্ধারের একটি উপায়ও তিনি বাৎলে দিলেন: ‘দেবতা, দানব, মনুষ্য, যক্ষ কেউ মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না, কিন্তু কোনো নারীর কথা তো আমি আমার বরে উল্লেখ করিনি। এমন কোনো নারী যদি খুঁজে বের করতে পারো, যে কিনা এই অসুরের সাথে যুদ্ধ করতে সক্ষম হবে, তবে সেই নারীকে দিয়েই তোমাদের মুস্কিল আসান হতে পারে।’
দেবতারা তখন তাদের প্রত্যেকের তেজ বা শক্তি এক জায়গায় পুঞ্জিভূত করলেন। সেই শক্তিপুঞ্জ থেকে সিংহের পৃষ্ঠে বসে বেরিয়ে আসলেন শক্তি। শক্তি শিবকে পতিত্বে বরণ করলেন। এত দিনে শিবের কৌমার্য ঘুচলো। এ থেকে যে আর একটি জিনিষ বোঝা গেল সেটা হচ্ছে এই যে নারীর প্রথম এবং প্রধান কাজ কোনো পুরুষকে বিয়ে করা। যাই হোক, শক্তির দশ দশটি হাত। দেবতারা প্রত্যেকে তাঁর এক একটি হাতে নিজের অস্ত্রটি তুলে দিলেন। শক্তি অচিরেই অসুর বিনাশ করে দেবতাদের স্বর্গরাজ্য পুনরুদ্ধার করলেন। দেবতাদের দুর্গতি নাশ করলেন বলে শক্তির নতুন নাম হলো ‘দুর্গা’।
অসুর বিনাশের সময় ‘রক্তবীজ’ বলে এক অসুর খুব ঝামেলায় ফেলেছিল দেবী দুর্গাকে। খড়গের এক কোপে দুর্গা রক্তবীজের মাথাটি তো কেটেই ফেলেছিলেন, কিন্তু তার দেহের রক্ত মাটিতে পড়তে না পড়তেই প্রতিটি রক্তবিন্দু থেকে সৃষ্টি হতে লাগলো নতুন নতুন রক্তবীজ অসুর যাদের মেরে শেষ করা শিবেরও অসাধ্য। যাই হোক, এ সমস্যার সমাধানে দেবী দুর্গা যে উপায়টি বের করেছিলেন তা ছিল একান্তই অভিনব। খড়গ দিয়ে অসুরের গলা কেটে তিনি এমনভাবে সেই অসুরের রক্ত পান করতে শুরু করলেন যে এক ফোঁটা রক্তও মাটিতে পড়তে পারছিল না। এ কাজে দুর্গাদেবী এতই উন্মত্ত হয়ে গেলেন যে এক সময় গায়ে বস্ত্র বলতে কিছু আর রইল না। নিজের নগ্নতা যখন দেবীর দৃষ্টিগোচর হলো তখন অসুরের কাটা হাত দিয়ে মিনিস্কার্টের মতো একটা কিছু বানিয়ে নিয়ে নিজের নিন্মাঙ্গ আবৃত করলেন তিনি, অসুরের কাটা মুণ্ডের মালা দিয়ে ঢাকলেন উর্ধ্বাঙ্গ। সর্বাঙ্গ অসুর রক্তে রক্তাক্ত, রক্ত শুকিয়ে সোনার অঙ্গ কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। দেবতারা শক্তির এ রূপের নাম দিলেন ‘কালী’।
যুদ্ধ আর অসুরনিধন চলছে বিরামহীন। অসুরবংশ নির্মূল হয় হয়। কিন্তু সব অসুরকেই যদি কালী হাপিশ করে দেন তবে তো অসুরবংশ লোপ পাবে আর অসুর না থাকলে তো সৃষ্টির ভারসাম্যও থাকবে না। সৃষ্টিতে সুর-অসুর, ভালো-খারাপ দুইই দরকার (তবে দেখতে হবে ভালোর সংখ্যা আর পরিমাণটা যাতে একটু বেশি থাকে)। কিন্তু কে থামাবে রণরঙ্গিনী দুর্গাকে? বিষ্ণুর এখানে কিছু করার নেই কারণ পরের বৌয়ের রাগ (বা অনুরাগ) থামানোর মতো উটকো ঝামেলা ভগবানও ঘাড়ে নিতে চান না। কালী শিবের স্ত্রী, তাই অগত্যা শিবকেই আসতে হলো রণক্ষেত্রে। শিব কালীর পায়ের কাছে গা এলিয়ে শুয়ে পড়লেন। শিবের গায়ে পা লাগতেই থামতে হলো কালীকে। তাকিয়ে দেখেন পায়ের নিচে স্বামী শিব! লজ্জায় জিহ্বায় কামড় দিয়ে সেখানেই থেমে গেলেন কালী। নারী স্বাধীনতার এক চরম রূপ এই কালী মূর্তি। পতি পরম গুরুর বুকে পা দিয়ে সটান জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে থাকা অর্ধ-উলঙ্গ নারীর ছবি ‘উল্টা-মডার্ন’ ইওরোপ-আমেরিকা এখনও কল্পনা করতে পারে কিনা সন্দেহ। যাই হোক, যুদ্ধ আর অসুরহত্যার সেখানেই ইতি। যে অসুরগুলো সেদিন বেঁচে গিয়েছিল তারাই সম্ভবত বিংশ শতাব্দীতে হিটলার, ইয়াহিয়া, জর্জ বুশ, লাদেন হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছে। এসব অসুর সৃষ্টির কোন ভারসাম্য রক্ষা করছে কে জানে!
অনেক ভালো লাগলো৷ জটিল একটা বিষয়কে এতো সহজ করে বুঝিয়ে বললেন, ভুলবো না কখনো৷
রসিকতাগুলো সূক্ষ, তারচে সূক্ষ অন্তর্নিহিত বিষয়গুলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
https://buytadalafshop.com/ – cialis for sale
https://buysildenshop.com/ – Viagra
what is plaquenil used for
Amoxicillin Alcohol
Viagra
propecias
no presription finasteride
Amoxil For Eye Infection In Cats
Keflex Chronic Sinus Infection buy cialis on line
Cialis Efecto Duracion
Viagra Forum Wirkung
gabapentin for dogs
Levitra Generique En Officine
does propecia work
Viagra Ordonnancecialis
Teva Amoxicillin
jelly kamagra compare kamagra prices kamagra papel
eviffviony Unfortunately neither levaquin nor ciprofloxacin were found more effective than placebo in a randomized controlled trial in men with CPPS Nickel et al a Alexander et al http://www.apriligyn.com
Heavy bleeding occurs when the uterine lining builds up for a long period of time order cialis Moises PViASskpWGfbkOEunz 6 4 2022