উভয় বাংলার লেখ্য, দৃশ্য ও শ্রাব্য গণমাধ্যমে গত কয়েক বৎসর যাবৎ প্রমিত বাংলা ভাষার ‘দূষণ’ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিকৃত উচ্চারণ, অকারণে ইংরেজি ও আঞ্চলিক শব্দমিশ্রণ ও বানান-বিকৃতি এই ভাষাদূষণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। পত্রপত্রিকায়, ইন্টারনেটের ব্লগে কমবেশি বারোটি প্রতিষ্ঠান ও গোষ্ঠীকে বাংলা ভাষার দূষণের জন্য দায়ী করা হয়েছে।
১. হিন্দি চ্যানেল: প্রথম অপরাধ: হিন্দি চ্যানেলগুলোর চটকদার অনুষ্ঠান (প্রধানত হিন্দিতে তর্জমাকৃত জাপানি কার্টুন ডোরেমন) দেখে দেখে শিশুরা হিন্দি বলা শিখে যাচ্ছে যদিও শুদ্ধ করে ইংরেজি বলতে-লিখতে পারছে না (হিন্দি শুদ্ধ করে বলছে কিনা সে প্রশ্ন অবশ্য কেউ করছে না)। দ্বিতীয় অপরাধ: বাংলাদেশের শিশু তথা সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশি জনগণ বিজাতীয় হিন্দু সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে, দেশীয় ইসলামী সংস্কৃতি শিখছে না বা ভুলে যাচ্ছে। মানুষের ভাষায় ঢুকে যাচ্ছে হিন্দুয়ানী।
২. বিশেষ কিছু নাট্যকার এবং নাটক-প্রযোজক-পরিচালক: এই নাট্যকারেরা তাদের চরিত্রের মুখে ইংরেজি এবং আঞ্চলিক ঢঙে উচ্চারিত, ইংরেজি শব্দ-মিশ্রিত বিকৃত ভাষা বসিয়ে দিচ্ছেন। পরিচালক-প্রযোজকেরা সেই সব নাটক চিত্রায়নের ব্যবস্থা করছেন।
৩. বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল: প্রথম অপরাধ: এরা উপরোক্ত নাটকগুলো প্রচার করছে। দ্বিতীয় অপরাধ: বাংলা শব্দের পরিবর্তে এরা অনুষ্ঠানের নামকরণে ‘টক শো’, ‘মিউজিক শো’, ‘নিউজ আপডেট’, ‘নাইট শো’, ‘মেগা সিরিয়াল’, ‘প্রাইম নিউজ’, ‘হেলথ লাইন’ ইত্যাদি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করছে। তৃতীয় অপরাধ: অনুষ্ঠান সঞ্চালকেরা বাংলিশ ভাষায় কথা বলছে।
৪. বেসরকারি এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করা হচ্ছে ইংরেজিতে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা পড়ানোই হচ্ছে না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনকি খোদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (হায়! এই প্রতিষ্ঠান ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার!) অনেক বিভাগে ইংরেজিতেই পাঠদান করা হচ্ছে। বাংলায় পাঠদানের সময় প্রমিত বাংলা বলেন না এমন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকও বিরল নয়।
৫. কিছু সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী: প্রথম অপরাধ: এরা আনন্দবাজার পত্রিকার বানানরীতি চালু করার অসৎ উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে এমনভাবে বাংলা শব্দের বানান লিখছে যার ফলে শুদ্ধ আর অশুদ্ধ বানানের মধ্যে পার্থক্য করা মুস্কিল হয়ে পড়েছে। দ্বিতীয় অপরাধ: এরা বাংলা শব্দকে ভুল অর্থে ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ, ‘শ্রমিকেরা তাঁহাদের দাবিতে সোচ্চার হওয়া ব্যাপক অশান্তি হইল এবং মালিকপক্ষ পদক্ষেপ লওয়ায় শ্রমিক নেতা তাঁর বক্তব্য রাখিলেন।’Ñ এই বাক্যটির মধ্যে নাকি আনন্দবাজার পত্রিকার (১৯/২/২০১২) মতে চারটি ভুল আছে: “সোচ্চার শব্দটির অর্থ ‘পাখির সশব্দ মলত্যাগ’; ‘প্রভূত’ বোঝাইতে ‘ব্যাপক’ শব্দটি ব্যবহার করা চলে না; পদক্ষেপ ‘লওয়া’ সম্ভব নহে, তাহা করা যায়; এবং বক্তব্য ‘রাখা’ যায় না, তাহা পেশ করতে হয়।
৬. কয়েকটি পত্রিকা: প্রথম অপরাধ: এরা বাংলা ব্যাকরণকে বিকৃত করছে। যেমন, ১লা বৈশাখ, ২১শে ফেব্রুয়ারি বা ৭ই মার্চ না লিখে এরা হিন্দির অনুকরণে যথাক্রমে ১ বৈশাখ, ২১ ফেব্রুয়ারি এবং ৭ মার্চ লিখছে (উল্লেখ্য যে এই বিকৃতি শুরু করেছিলেন খোদ রবীন্দ্রনাথ)। এই প্রবণতা লেখার ভাষা থেকে ইতিমধ্যে মুখের ভাষায় চলে এসেছে। দ্বিতীয় অপরাধ: বাংলা শব্দের প্রচলিত বানান বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের বানানে বাংলা শব্দগুলো লেখা হচ্ছে (যেমন, ‘কৃষক’ এর পরিবর্তে ‘ক্রিশক’; ‘ক্রিকেট’ এর পরিবর্তে ‘কৃকেট’)।
৭. বাংলা একাডেমি: পুরোনো প্রতিষ্ঠিত বানান বাতিল করে আনন্দবাজার পত্রিকার বানানবিধির আলোকে নতুন বানান চাপিয়ে দিয়ে বাংলা একাডেমি ভাষা-ব্যবহারকারীদের বিশেষ বানান সম্পর্কে দ্বিধাগ্রস্ত করছে যার ফলে তারা বুঝতে পারছেন না কোনটি ‘শুদ্ধ’ এবং কোনটি ‘অশুদ্ধ’ বানান।
৮. শিক্ষামন্ত্রণালয় তথা সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা: প্রথম অপরাধ: ২০০২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার মূল ধারার (এনসিটিভি যে ধারার শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তক জোগান দেয়) মধ্যেই সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চবিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার অনুমতি দেবার ফলে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলার ব্যবহার সঙ্কুচিত হয়েছে। দ্বিতীয় অপরাধ: তরুণ প্রজন্মকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করার সুযোগ দেবার ফলে তারা বাংলায় দুর্বল হয়ে গেছে। এরাই ইংরেজি ঢঙে ও ইংরেজি শব্দ মিশিয়ে বাংলা বলছে।
৯. বাংলাদেশের সংসদ: বাংলাদেশের সংসদে প্রমিত বাংলার চর্চা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। অধিকাংশ সদস্যের বাংলা উচ্চারণে আঞ্চলিকতা লক্ষ্য করা যেতে পারে। এক সংসদ সদস্যার বক্তৃতায় ‘চুদুর-বুদুর’ শব্দটির ব্যবহার সংসদে ব্যবহৃত ভাষায় আঞ্চলিক শব্দমিশ্রণের অন্যতম প্রমাণ। কোনো এক মন্ত্রীর ‘আই এ্যাম একদম ফেড আপ’ বাক্যটি প্রমাণ করে যে ভাষামিশ্রণের কবল থেকে মন্ত্রীরাও মুক্ত হতে পারছেন না।
১০. বেশিরভাগ বাঙালি: কোনো কোনো লেখকের মতে, সিংহভাগ বাঙালি বাংলাভাষার দূষণে অংশ নিচ্ছে। এরা চায় না শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলতে, শুদ্ধ বানানে লিখতে, নির্ভুল শব্দ ব্যবহারে পরিচ্ছন্ন ভাষারীতি গড়ে তুলতে।
১১. বাংলাদেশ সরকার: প্রথম অপরাধ: সরকারি প্রতিষ্ঠানেই মানা হয় না প্রমিত বানানরীতি। বাংলা একাডেমী, এনসিটিবি ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলিয়ে সরকারিভাবে আছে তিন রকমের বানানরীতি। অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের বানানরীতিও ওই তিন প্রতিষ্ঠান মানে না। দ্বিতীয় অপরাধ: সরকারি প্রতিষ্ঠানের নামকরণ হয় ইংরেজিতে: NCTB, BGB, Teletalk ইত্যাদি।
১২. এন.জি.ও. ও সিভিল সোসাইটি: এরা বিশ্বায়নে বিশ্বাস করে এবং জাতীয়তাবাদ ও জাতি-রাষ্ট্রের উপযোগিতা স্বীকার করে না। এরা মাতৃভাষার প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী, কিন্তু সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু হলে বাঙালি জাতীয়তার বিকাশ ঘটবে বলে এরা বাংলা ভাষার প্রতিষ্ঠার পক্ষপাতি নয়।
পত্রপত্রিকা ও আন্তর্জালে প্রকাশিত বিভিন্ন লেখকের লেখা থেকে আমরা দেখলাম যে কমবেশি বারোটি পক্ষ বাংলাভাষার তথাকথিত দূষণের দায় এড়াতে পারেন না। তবে এদের মধ্যে কারা নিছক দূষণের শিকার এবং কারা প্রকৃতপক্ষে দূষণের জন্যে দায়ী – সে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
Lasix
Wellbutrin Xl 300 Mg Buy
gabapentin 200mg
cheap viagra soft
Purchase Amoxicilina Cod Accepted Ups
Acheter Du Viagra En Allemagne
Generika Cialis Kaufen
Aumoxtine500 No Description Needed cialis cheapest online prices
Buy Fluconazole 200 Mg
acheter cialis en ligne canada
buy azithromycin in usa
Comprar Cialis De Calidad
2 100 2 100 2 100 2 088 2 088 2 088 2 077 2 012 2 000 2 000 2 000 2 000 2 000 2 000 2 000 2 000 2 000 2 000 2 000 2 000 buying cialis online reviews
Deadman nDVZPGFzoKQ 6 16 2022 how long does viagra remain effective My tenth season, I noticed I couldn t keep weight on, and I just went to a doctor, and he ran blood tests, and they just told me