অতীত বা ইতিহাসের ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকে বর্তমান ও ভবিষ্যতের বহুতল ভবন। বলা হয়ে থাকে, ইতিহাসের বড় শিক্ষা এটাই যে ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষাগ্রহণ করে না এবং এ কারণেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। নিচে দ্বাদশ শতকের একটি ঘটনাকে উদ্দীপক হিসেবে ব্যবহার করে ইতিহাস ও রাজনীতির একগুচ্ছ সৃজনশীল প্রশ্ন প্রণয়নের চেষ্টা করা হয়েছে।
উদ্দীপক: থমাস বেকেট (১১১৯-১১৭০) ছিলেন ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় হেনরির (১১৩৩-১১৯৮) সময়ে রাজপ্রাসাদের চ্যান্সেলর। রাজপ্রাসাদে লেখাপড়ার কাজকর্মগুলো যিনি করতেন তাকে বলা হতো চ্যান্সেলর। বেকেটকে রাজা এতই পছন্দ করতেন যে তিনি তাঁকে ক্যান্টারবারি ক্যাথেড্রালের আর্চবিশপ নিযুক্ত করেন। রাজা ভেবেছিলেন, বেকেট তাঁর কথামতো কাজ করবেন, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে হলো তার উল্টোটা। যাজক বা গীর্জার সঙ্গে সম্পর্কিত লোকদের বিচার করা নিয়ে রাজার সঙ্গে অচিরেই নতুন আর্চবিশপের মতদ্বৈত দেখা দিল। বেকেটের মত ছিল এই যে ধর্মনিরপেক্ষ রাজশক্তি যাজকদের অপরাধের বিচার করতে পারবে না, কারণ যাজকদের বিচার হতে হবে যাজক আইনে। বেকেটের কথা মিথ্যা নয়, কারণ ইওরোপের সব দেশে তখন দুই ধরনের আইন ছিল: যাজক আইন এবং নাগরিক (দেওয়ানি ও ফৌজদারি) আইন। ফ্রান্সসহ ইওরোপের প্রায় সব রাজাই নিজ নিজ দেশে এই দ্বৈতশাসন মেনে নিতেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় হেনরি দাবি করলেন যে তিনি পেশা নির্বিশেষে সবার বিচার করবেন, কারণ তা যদি তিনি না পারেন, তবে শাসক হিসেবে তাঁর সার্বভৌমত্ব ক্ষুণœ হবে।
মনোমালিন্যের এক পর্যায়ে রাজা হেনরি এই মর্মে এক রাজকীয় সমন জারি করেন যে গির্জা এবং লেখাপড়ার সঙ্গে যুক্ত লোকজন রাজার অনুমতি না নিয়ে ইংল্যান্ড ত্যাগ করতে পারবেন না। উদ্দেশ্য ছিল, বেকেটকে তিনি ইংল্যান্ডে আটকে রাখবেন। কিন্তু রাজকীয় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেকেট ইংলিশ চ্যানেল পার হয়ে ফ্রান্সের বার্গান্ডিতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন এবং ফ্রান্সের রাজা বেকেটকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে থাকেন। বার্গান্ডির প্রধান শহর সঁস-এর ক্যাথেড্রালে অবস্থান করতে থাকেন বেকেট এবং সঁস থেকেই তিনি দ্বিতীয় হেনরির পক্ষাবলম্বী গীর্জার একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে ধর্মচ্যুত করেন।
পোপ জানতেন যে বেকেট গীর্জার স্বার্থই রক্ষা করছেন, কিন্ত সে সময়ে জার্মানির সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকার কারণে ইংল্যান্ডের রাজা হেনরির সমর্থন পোপের একান্ত প্রয়োজন ছিল। সুতরাং পোপ আলেকজান্ডারও বেকেটের সমর্থনে কিছু বলতে পারছিলেন না। ১১৭০ সালের জুন মাসে হেনরির এক পুত্রকে যখন যুবরাজ ঘোষণা করা হয় তখন বেকেটের অনুপস্থিতিতে (অন্য আরও কয়েজনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে) তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন ইয়র্কের আর্চবিশপ রজার। এই কাজটা ছিল একেবারেই বেআইনি, কারণ একমাত্র ক্যান্টারবারির আর্চবিশপই ইংল্যান্ডের রাজা বা যুবরাজের মাথায় মুকুট পরানোর অধিকার রাখেন। সীমালঙ্ঘনের অপরাধে রজারসহ হেনরির একাধিক সমর্থককে অবিলম্বে ধর্মচ্যুত করেন বেকেট।
এবার বেকেটকে সমর্থন না করে পোপের আর উপায় ছিল না। নিজেও না ধর্মচ্যুত হয়ে যান, এই ভয়ে রাজাও নমনীয় হন এবং বেকেট ক্যান্টারবারিতে ফিরে আসেন। বেকেট ইতিপূর্বে ধর্মচ্যুত সবাইকে ক্ষমা করতে সম্মত হন, কিন্তু রজার যেহেতু আর্চবিশপ, সেহেতু একমাত্র পোপই তাকে ক্ষমা করার অধিকারী বলে মত দেন বেকেট। ধৈর্যচ্যুত রাজা নাকি এই পর্যায়ে একদিন চিৎকার করে বলে উঠেন: ‘এই পাগলা যাজকের কবল থেকে আমাকে উদ্ধার করতে পারে এমন কেউ কি নেই!’ রাজার এই বক্তব্যকে আদেশ বলে ধরে নিয়ে নর্মান্ডি থেকে চার জন অতিউৎসাহী নাইট ক্যান্টারবারিতে গিয়ে ১১৭০ সালের ২৯শে ডিসেম্বর তারিখে বেকেটকে খুন করে আসে। নাইটরা দিনের বেলায় এক ঝোপে নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিল এবং রাতে হেনরির পক্ষের এক যাজক তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ক্যাথেড্রালের অভ্যন্তরে। প্রত্যক্ষদর্শীরা লিখেছেন, তরবারির দ্বিতীয় আঘাতের পরও বেকেট আচবিশপের মুকুট মাথায় নিয়ে দণ্ডায়মান ছিলেন। তৃতীয় আঘাতে গীর্জার বেদির সামনে হাঁটু গেড়ে পড়ে গিয়ে বেকেট বলেন: ‘আমি আমার জীবন ঈশ্বরকে নিবেদন করলাম!’ তৃতীয় আঘাতে বেকেটের মুকুট এবং মগজ দুইই মস্তক-চ্যুত হয়। খুনি নাইটদের পথপ্রদর্শক হেনরির পক্ষের সেই যাজক বেকেটের রক্ত ও মগজ পায়ে মাড়িয়ে লেপ্টে দেন ক্যান্টারবারির ক্যাথেড্রালের মেঝেতে এবং অতিউৎসাহে চিৎকার করে বলতে থাকেন: ‘এই যাজক আর কখনও উঠে দাঁড়াবেন না!’
মৃত্যুর পর পরই বেকেট জনগণের চোখে শহীদ বলে বিবেচিত হতে থাকেন এবং পোপ আলেকজান্ডারও তাঁকে সন্ত ঘোষণা করেন। রাজা এর পর পোপের সঙ্গে একটা সমঝোতায় আসতে বাধ্য হন। ক্রুসেডে যাবার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি এবং ইংল্যান্ডের যত আইনে গীর্জার অসম্মতি ছিল সবগুলো আইন বাতিল করেন। ১২ই জুলাই ১১৭৪ তারিখে রাজা ক্যান্টারবারিতে প্রকাশ্যে নিজের দোষস্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। শাস্তিস্বরূপ ক্যান্টারবারির ৮০ জন বিশপের প্রত্যেকে একটা ডাণ্ডা দিয়ে রাজাকে তিনটি করে মোট ২৪০টি বাড়ি মারেন। পৃষ্ঠদেশে ডাণ্ডাবাজি সমাপ্ত হবার পর রাজা তৃতীয় হেনরি বেকেটের মাজারে অর্ঘ্য প্রদান করেন (আজকের ভাষায় ‘জেয়ারত করেন’) এবং তাঁর সমাধিতে রাত্রি জাগরণ করেন। এভাবে প্রায় দশ বছর ধরে চলা (১১৬৩-১১৭৪) বেকেট-সঙ্কটের অবসান হয়।
সম্ভাব্য সৃজনশীল প্রশ্ন: ক. বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে সংঘঠিত কোনো ঘটনার সহিত বেকেট-সঙ্কটের কোনো সাদৃশ্য যদি তুমি লক্ষ্য করিয়া থাক, তবে সেই সাদৃশ্যের বিবরণ দাও। খ. বেকেট সঙ্কট ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার আলোকে উত্তর দাও: ১. মধ্যযুগ ও বর্তমান যুগে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য আছে কি? ২. যে কোনো যুগে শাসকদের ক্ষমতার মূল উৎস কোথায়? ৩. ক্ষমতার দ্বন্দ্বে আগে পরে কোন পক্ষের জয় ও কোন পক্ষের পরাজয় ঘটে এবং কেন ঘটে? ৪. যুক্তিবোধ ও ন্যায়বিচার কি ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিরসনে আদৌ কোনো ভূমিকা রাখে? ৫. ‘দেশের স্বার্থে নহে, বরং ব্যক্তি শাসক এবং তাঁহার উচ্ছিষ্টভোগী পারিষদগণের নিজস্ব চিন্তাভাবনা ও আচরণের কারণেই ক্ষমতার দ্বন্দ্বের সূচনা হয়।’ – এই উক্তির সহিত তুমি কি সহমত পোষণ কর?
zithromax azithromycine
Prednisone
finasteride buy online
cialis weight gain
how long does it take for propecia to work
Emotions Revealed Recognizing Faces and Feelings to Improve Communication and Emotional Life buy priligy online safe
Immunocytochemical methods are most extensively used for the detection of isolated tumour cells in bone marrow and lymphatic tissue buy cialis non prescription Your doctor will base the dosage on what has been successfully used in studies, as well as your weight and other factors