Scroll Top
19th Ave New York, NY 95822, USA

সারমেয় কাহিনি

lgbrz02dog1712

সে যে কত কাল আগের কথা কার বাবার সাধ্য বলে। ধরা যাক, চলছে তখন শ্রীরামচন্দ্রের রাজত্বকাল। ভারতবর্ষে তখন কোনো নির্বাচন নেই, হরতাল নেই, অবরোধ নেই। থাকবে কি করে এসব উটকো ঝামেলা? সরকারি বা বিরোধী কোনো দলই যে ছিল না সেখানে! রামচন্দ্র একা হাতে তার উপদেষ্টাদের সাহায্যে রাজ্য চালাতেন।
এই রামরাজ্যে এক ব্রাহ্মণ বাস করতেন। সারাদিন তিনি যজন-যাজন-অধ্যাপনে ব্যস্ত থাকতেন। কোন ছাত্রের কাছ থেকে কোন প্রকার বেতন তিনি নিতেন না। তখনকার দিনে বিদ্যা দান করে বিনিময়ে কিছু গ্রহণ করলে সেই ব্রাহ্মণ সমাজে পতিত হতেন। তাহলে কেমন করে সংসার চলতো তাঁদের? রাজা-মহারাজা-জমিদারেরা ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতদের নিষ্কর সম্পত্তি দিয়ে দিতেন। সেই সম্পত্তির আয় থেকে তাঁদের গ্রাসাচ্ছাদনের কাজ কোনমতে চলে যেতো। কিন্তু আমাদের এই ব্রাহ্মণটি ছিলেন আরও এক কাঠি সরেস। তাঁর আত্মমর্যাদাবোধ ছিল অতি প্রবল। তিনি কোনও বিশেষ ব্যক্তির কাছ থেকে বড় কোন দান নিতে রাজি ছিলেন না। তবে তখনকার দিনে মাধুকরী অর্থাৎ ভিক্ষায় কোনো দোষ ছিল না। বুদ্ধদেব বলুন আর লালন ফকিরই বলুন সবাই প্রতিদিন ভিক্ষা করে জীবনধারণ করতেন। আমাদের গল্পের এই ব্রাহ্মণও প্রতিদিনের বিদ্যাদান শেষে আশেপাশের গ্রামে ভিক্ষায় বেরোতেন। গ্রামবাসীরা যে যা চাল-ডাল-আনাজপাতি দিত তা নিয়ে তিনি নিজের পাঠশালে ফিরে আসতেন এবং নিজের হাতে রান্না করে সূর্যদেব মধ্যগগনে পৌঁছার পূর্বেই মধ্যাহ্নভোজন তথা দিনের একমাত্র ভোজনপর্ব সমাধা করতেন। সাত্ত্বিক ব্রাহ্নণেরা সেকালে একাহারী হতেন অর্থাৎ দিনে একবার বই দু’বার অন্নগ্রহণ করতেন না তাঁরা।
যে দিনের ঘটনা নিয়ে আমার গল্প সেদিনও আমাদের গল্পের ব্রাহ্মণ ভিক্ষায় বের হয়েছেন। একটু দেরিই হয়ে গিয়েছিল সেদিন তাঁর পড়াতে পড়াতে। পাঠশালার অর্ধক্রোশ দূরেই একটি সম্পন্ন গ্রাম ছিল। ব্রাহ্মণ ভাবলেন, আজ বেশি দূরে গিয়ে কাজ নেই, কাছের এই গ্রামেই যাওয়া যাক। কল্পনা করুন, ব্রাহ্মণের পাঠশালা আর গ্রামকে যুক্ত করেছে সরু একটি রাস্তা। কোনো মতে দুই জন সে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে পারে। ব্রাহ্মণ হেঁটে চললেন। কতদূর গিয়েই দেখেন, রাস্তার উপর আড়াআড়ি হয়ে এক কুকুর এমনভাবে শুয়ে আছে যে তাকে না পাড়িয়ে বা না ডিঙিয়ে পথচলা অসম্ভব। পাশ দিয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়, কারণ রাস্তার দু’পাশে ছিল গভীর খাল।
কঠিন অবরোধ! কুকুর তাড়ানোর যত ধ্বন্যাত্বক শব্দ জানা ছিল, ব্রাহ্মণ তার সবগুলো ব্যবহার করলেন। অনেক হুস হাস, ছেই ছেই করলেন, কিন্তু কুকুরজী নট নড়ন চড়ন। আবার সারমেয়পুঙ্গব যে ঘুমিয়ে আছেন তাও বলা যাবে না, কারণ গায়ের মাছি তাড়ানোর জন্যে মাঝে মাঝেই তার ন্যাজ নড়ছিল। এদিকে বেলা বেড়ে চলেছে। মধ্যাহ্ন পার হয়ে গেলে ব্রাহ্মণের আর খাওয়াই হবে না সেদিন, পরের দিন সকাল পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হবে তাকে। কি করা যায়? কোনো জীবিত প্রাণীকে পাড়িয়ে যাবারতো প্রশ্নই আসে না আবার কোনো প্রাণীকে ডিঙিয়ে যেতেও ব্রাহ্মণের নীতিবোধে বাঁধে।
কিন্তু পেটের জ্বালা বড় জ্বালা! সাতপাঁচ ভেবে আর উপায় না দেখে গান্ধীজির মতো ধুতিটা হাঁটুর উপর তুলে ব্রাহ্মণ দিলেন এক লাফ… কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ব্রাহ্মণের দুর্ভাগ্য, তাঁর বামপায়ের কনিষ্ঠ অঙ্গুলি লেগে গেলো কুকুরের লেজের অগ্রভাগে। ব্রাহ্মণ অবশ্য খেয়ালও করেননি ব্যাপারটা। তিনি হন হন করে রওয়ানা দিতে যাচ্ছিলেন গ্রামের দিকে। কিন্তু হটাৎ তিনি শুনতে পেলেন কে যেন বলছে: ‘দাঁড়াও ব্রাহ্মণবর, তিষ্ট ক্ষণকাল!’ কে কথা বলছে? তিনি ছাড়াতো দ্বিতীয় মনুষ্য নেই এখানে। ব্রাহ্মণ অবশেষে বুঝতে পারলেন, শুয়ে থাকা সেই কুকুরই পরিষ্কার মনুষ্যকণ্ঠে সাধু ভাষায় বলছে: ‘হে ব্রাহ্মণ, তুমি জ্ঞানী এবং উচ্চবংশীয় মনুষ্য হইয়াও আমার মতো ইতরযোনিসম্ভূত কুক্কুরকে পদাঘাত করিলে কেন?’
ব্রাহ্মণ উত্তর দেবেন কি, বিস্ময়ে তিনিতো একেবার ডবল হা হয়ে গেছেন। কলিযুগে শুনেছি, কত কি ঘটবে, কিন্তু এই দ্বাপরযুগে এক কুকুর সাধু ভাষায় কথা কইছে! ক্ষিধে তখন ব্রাহ্মণের মাথায় উঠেছে। কোনো মতে নিজেকে সামলে ব্রাহ্মণ জানালেন যে অনেক কসরৎ করেও কুত্তেজীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ঘূণাক্ষরেও যদি তিনি জানতেন যে সারমেয় মহোদয় সংস্কৃত বা তার অপভ্রংশ বাংলায় কথা কইতে পারেন তবে তিনি কখনই হাই-হুই-ছেই-ছেই করতেন না, পরিষ্কার মনুষ্যভাষাতেই তাঁকে পথ ছেড়ে দিতে বলতেন। যাই হোক, যা ঘটার ঘটে গেছে। তবে লাথি তিনি কষ্মিনকালেও মারেননি – এটা তিনি জোর দিয়ে বলতে পারেন। কুত্তাজীর লেজে যদি অসাবধানতাবশত তার পা লেগে গিয়েও থাকে তো তবে তার জন্যে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।
কুকুর কিছু শুনতে রাজি নয়। বেশ উকিলী ভঙ্গীতে কুকুর বললো: ‘দেখুন, ঠাকুর মশাই, আপনি বলছেন, আপনি লাথি মারতে চাননি; আমি বলছি, আমার লেজে আপনার পা লেগেছে – আমি মনে করি, এই গুরুতর সমস্যার সমাধান আপনার ক্ষুদ্রবুদ্ধি এবং আবার কুকুরবুদ্ধিতে করা সম্ভব নয়। চলুন, আমরা দু’জনেই রামচন্দ্রের দরবারে যাই। তিনি মহান ও সুবিচারক। অবশ্য আপনার এখানে কিছু বলারও নেই। প্রথমত আপনি আসামী এবং আমি ফরিয়াদী। দ্বিতীয়ত আপনি যেতে না চাইলে আপনাকে যেতে বাধ্য করার মতো ধারালো দাঁত এবং নখ আমার আছে।’ ব্রাহ্মণ আর কি করবেন। এমনিতেই আজ মধ্যাহ্নভোজনের দফারফা। কুকুরের দাঁত আর নখের আঘাতে জলাতঙ্ক রোগে অকালে পরপারে যাওয়ার চাইতে রামচন্দ্রের দরবারে যাওয়াই তিনি শ্রেয় মনে করলেন।
রামরাজ্যে তখন আক্ষরিক অর্থে বারোটা বেজে গেছে, অর্থাৎ সূর্য প্রায় মধ্য গগনে। রাজ্যের যত ফালতু বিচার করতে করতে ক্লান্ত হয়ে রামচন্দ্র ক্ষণে ক্ষণে আকাশের দিকে তাকাচ্ছিলেন (সেকালে হাত-টেবিল-দেয়াল কোন ঘড়িই ছিল না, সূর্যঘড়িই ছিল ভরসা) আর ভাবছিলেন কখন টিফিনের সময় হবে। এমন সময় ব্রাহ্মণকে অগ্রভাগে নিয়ে দরবারে কুকুরের প্রবেশ। রাজসভায় কুকুর ঢুকছে বলে অবাক হবেন না। ভাববেন না যেন আমি গল্পের গরুকে গাছে চড়াচ্ছি। যে কালে কুকুর মানুষের ভাষায় কথা কইতে পারে সেকালে কুকুর রাজদরবারে গিয়ে বিচার চাইবে এতে আশ্চর্যের কি আছে? আজকালতো কুকুরের চেয়ে অধম কত লোক ক্ষমতার আশেপাশে ঘুরঘুর করে, কত বড় বড় পদ পায়। যাই হোক, কুকুর রামচন্দ্রের সম্মুখবর্তী হয়ে বললো: ‘মহারাজ, এই ব্রাহ্মণ আমাকে বিনাদোষে পদাঘাত করেছেন। আমি তাঁর এই অপরাধের বিচার চাই!’ একি আপদ! এমনিতেই যত সব ফালতু বিচার করতে করতে শ্রীরামের মেজাজ এবং দিন উভয়েরই সাড়ে বারোটা বেজে গেছে। এখন দরবারে তালা দিয়ে অন্তপুরে গিয়ে সীতার পাশে শুয়ে একটু রসালাপ করার ইচ্ছে হচ্ছিল। কিন্তু ভাগ্য খারাপ হলে ভগবানেরও বাড়া ভাতে ছাই পড়তে পারে।
রামচন্দ্র জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ব্রাহ্মণের দিকে তাকাতে ব্রাহ্মণ পুরো ঘটনাটার অনুপুঙ্খ বর্ণনা দিলেন। রামচন্দ্র মনোযোগ দিয়ে সব শুনলেন এবং শোনার পর আইনের যত পুস্তক দরবারে ছিল সব খুঁটিয়ে দেখলেন। আইনের ওয়েবসাইটগুলোতেও সার্ফ করে দেখলেন কিছুক্ষণ। নাহ্, এত ছোট অপরাধের কোন শাস্তি কোনকালে কখনও দেওয়া হয়নি। কুকুরকে পদাঘাত করা যে একটি শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ এবং কোন কুকুর যে তার জন্য বিচার চাইতে রাজদরবারে পর্যন্ত আসতে পারে তা রামচন্দ্র নিজেও তাঁর কোন অবতার জন্মে শোনেননি। রামচন্দ্র কুকুরকে বললেন: ‘দেখুন, ব্রাহ্মণ নিজেও স্বীকার করছেন যে তাঁর পা আপনার শরীরে লেগেছে কিন্তু ইচ্ছে করে কাজটি তিনি করেননি। এখন, আপনিই বলুন, কি শাস্তি তাঁকে দেয়া যায়। আকৃতিতে কুকুর হলেও প্রকৃতিতে তো আপনাকে তো বেশ বুদ্ধিজীবী বলেই মনে হচ্ছে? কলিযুগ হলে আপনাকে জিগ্যেস করতাম আপনি টেলিভিশনে মধ্যরাতের টক-সওয়ার হন কিনা বা নিদেনপক্ষে পত্রপত্রিকায় কলামটলাম লিখে থাকেন কিনা!’
কুকুর রামচন্দ্রের ইয়ার্কি উপেক্ষা করে বললো: ‘মহারাজ, আমার বিচার যদি মানেন, তবে এই ব্রাহ্মণকে আপনি পুণ্ড্রবর্ধন, হরিকেল, সমতট, বঙ্গ…এই দেশগুলোর মধ্যে যে কোন একটির রাজা করে দিন!’
রামচন্দ্র যেন দ্বিতীয়বার আকাশ থেকে পড়লেন (দ্বিতীয়বার, কারণ, রাম যেহেতু বিষ্ণুর অবতার এবং বিষ্ণু থাকেন আকাশে সেহেতু পৃথিবীতে রামচন্দ্র আকাশ থেকেই পড়েছিলেন, কৌশল্যা-দশরথ দম্পতি উপলক্ষ মাত্র ছিল)।
‘বলেন কি! আমিতো ভাবছিলাম, ব্রাহ্মণকে দু’চার টাকা অর্থদ- বা ঘন্টা দুয়েকের জেল দিলেই যথেষ্ট শাস্তি দেয়া হবে! তা না করে সোজা রা-জা! কি রকম রাজা? বড় না ছোট? মন্ত্রী, মেয়র, ওয়ার্ড কমিশনার, নাকি গ্রামের চেয়ারম্যান? এ কি শাস্তি, না পুরষ্কার? দেখুন, আমি ভগবান হওয়া সত্বেও আমার মাথা কিন্তু ঢাকার জিঞ্জিরায় তৈরি পাকিস্তানি ফ্যানের মতো বন বন করে ঘুরছে; আপনারটা ঠিক আছেতো?’
কুকুর শান্তভাবে বললো: ‘প্রভু! শহর-বাংলার ইন্টেলেকচুয়াল কুকুরের মাথা আমার, এ মাথা ভাদ্র মাসেও খারাপ হয় না। আমার কথাকে এই লেখাটার মতো ফালতু রম্যরচনা মনে করবেন না, আমি কিন্তু সিরিয়াস! অলর্ক-পুরাণে (সংস্কৃতে ‘অলর্ক’ মানে ‘পাগলা কুকুর’) কথিত আছে: যে ব্যক্তি একবার গঙ্গার ব-দ্বীপ অঞ্চলে রাজপদ পায়, সেই ব্যক্তি অবশ্যই জন্মান্তরে কুকুরযোনি প্রাপ্ত হয়। শুধু রাজা কেন, এই অঞ্চলে যাদেরই হাতে ক্ষমতা থাকে, তারা সবাই ধরাকে সরাজ্ঞান করে। বিপ্রতীপ তীরনিঃক্ষেপ বা ক্রসফায়ার থেকে শুরু করে ক্ষমতার এত বিচিত্র অপব্যবহার তারা করে যে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে তাদের সকলকেই ঈশ্বর পরের জন্মে ‘কুত্তার বাচ্চা’ (গালি নয়, আক্ষরিক অর্থে) বানিয়ে পৃথিবীতে ফেরৎ পাঠান রাস্তাঘাটে জনগণের লাথি খাওয়ার জন্য। ছোট-বড়-মাঝারি ক্ষমতাবানের সংখ্যা এই সব অঞ্চলে সবসময়ই বেশি ছিল বলেই সেখানকার রাস্তাঘাটে বেওয়ারিশ রোডেশিয়ান কুকুরের এত ছড়াছড়ি। ভবিষ্যতে যারা কুকুরযোনি প্রাপ্ত হবে তারাই সমতটের হর্তা-কর্তা-বিধাতা। ‘বাঙালি চেয়েছিল ‘স্বায়ত্বশাসন’, পেয়েছে ‘শ্বায়ত্ব-শাসন’ (সংস্কৃতে ‘শ্ব’ মানে ‘কুকুর’)!’ বেশি আর কি বলবো মহারাজ, আমি নিজেও গত জন্মে ব-দ্বীপ অঞ্চলের রাজা ছিলাম। আসলে নিজের শাপমোচন করার উদ্দেশ্যেই আমি সরু রাস্তায় শুয়েছিলাম।’
রাজসভায় পিনপতন স্তব্ধতা। পাণ্ডববর্জিত, অনার্য্য-অসভ্য ব-দ্বীপ অঞ্চল থেকে ভেসে আসা বহু কুকুরের সম্মিলিত ঘেউঘেউয়ের শব্দে স্তব্ধতার চাদরটি বারে বারে কেঁপে উঠছিল। এ ধরনের ‘ন যযৌ ন তস্থৌ’ পরিস্থিতিতে মাথা খোলার জন্যে আয়ুর্বেদে কিঞ্চিৎ ঐক্ষব (ইক্ষুজাত) সুরা পানের বিধান আছে। কিন্তু ধর্মব্যবসায়ীদের আপত্তির কারণে রামরাজ্যে প্রকাশ্যে রামের মোড়ক-উন্মোচন শ্রী রামের পক্ষেও অচিন্তনীয় ছিল।

Comments (43)

আপনার গল্পটি আমি আমারএকটি সংকলনে প্রকাশ করতে চাই

Prescription Drugs From Australia

Minocycline Vs Amoxicillin

Usa Viagra Brand Ship 2 3 Days buy kamagra uk with mastercard Levitra Indicazioni Terapeutiche

Xtruzz Comprar Cialis Generico Por Telefono Plaquenil Kdzxex tomar viagra y alcohol

buy clomid 50 mg cheapest clomid where to buy clomid

where to buy arava 10 mg cost of arava cost of arava

lasix 100 mg purchase lasix 100mg otc lasix purchase

catapres purchase catapres generic how to buy catapres 100 mcg

nortriptyline 25 mg united states nortriptyline 25 mg cost nortriptyline otc

differin 15g generic differin nz differin g pharmacy

imuran over the counter imuran 50mg cheap imuran 25mg without prescription

propecia 1mg medication http://propeciaz.com/# – propecia 1 mg canada propecia united states

It’s difficult to find knowledgeable people in this
particular subject, however, you seem like you know what you’re
talking about! Thanks

Salvioli S, Ardizzoni A, Franceschi C, Cossarizza A JC 1, but not DiOC6 3 or rhodamine 123, is a reliable fluorescent probe to assess delta psi changes in intact cells implications for studies on mitochondrial functionality during apoptosis propecia prescription online A judge has denied bail for Hernandez, and he is being held in a Massachusetts jail

Leave a comment