Scroll Top
19th Ave New York, NY 95822, USA

যাত্রাপালা ‘চন্দ্রগুপ্ত’

Chandra-4813.3Av-453.02

দৃশ্য-১
[পাটলিপুত্র নগরের গোপন মন্ত্রণাকক্ষ। চাণক্য দণ্ডায়মান। ভূমিতে যুক্তকরে জানু মুড়িয়া উপবিষ্ট চন্দ্রগুপ্ত]

চাণক্য: “শুন চন্দ্রগুপ্ত! ১. বন্ধুকে সন্দেহ করা, ২. শত্রুকে সুযোগ দেওয়া, ৩. কী করা উচিত তাহা না জানা এবং ৪. যাহা করার দরকার নাই তাহা করা– কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের স্বভাবে যদি এই চারটি বৈশিষ্ট্য থাকে, তবে সে যে অচিরেই নিজেকে এবং সেই সাথে দেশকেও বিপদের মধ্যে ফেলিবে তাহাতে আর সন্দেহ কী।”

চন্দ্রগুপ্ত: “কে সেই ব্যক্তি, কোন সে দল প্রভু?”

চাণক্য: “চুপ, চন্দ্রগুপ্ত, চুপ! দেয়ালেরও কান আছে।”

দৃশ্য-২
[পাটলিপুত্র নগরের গোপন মন্ত্রণাকক্ষ। চাণক্য উচ্চতর আসনে আসীন। নিম্নতর আসনে যুক্তকরে উপবিষ্ট চন্দ্রগুপ্ত]

চাণক্য: “শুনিলাম, তুমি নাকি বলিয়াছ, কাহারও শয়নকক্ষের নিরাপত্তা দিতে তুমি অক্ষম।”

চন্দ্রগুপ্ত: “ঠিকই শুনিয়াছেন। দেশের নগরসমূহে লক্ষ লক্ষ গৃহ, কিন্তু লক্ষ লক্ষ রাজপুরুষ আমার নাই।”

চাণক্য: “শয়নকক্ষের নিরাপত্তা দিতে পারিবে না, ভালো কথা, কিন্তু শয়নকক্ষে, মন্ত্রণাকক্ষে বলিবার মতো কথা প্রকাশ্যে ভোজনকক্ষে কেন বলিতে যাও? এতদিন রাজনীতি করিবার পরেও তুমি কেন প্রগলভা কিশোরীর মতো আচরণ কর? এখনও সময় আছে। সাবধান হও! রাজা চোখ দিয়া নহে, কান দিয়া দেখিবে। যদি কোনো কথা বলিতেই হয়, তবে প্রথমে নিজের মনের কথা অন্যকে দিয়া বলাইয়া দেখিবে, তাহাতে কী প্রতিক্রিয়া হয়। তারপর সুবিধামতো সেই ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে শাসন করিবে অথবা সমর্থন করিবে। নীতিশিক্ষায় কি পড় নাই: ‘স্বীয় জিহ্বা শাসনে রাখিবে!’ অনাগত যুগের কবি ভারতচন্দ্র একদিন কী লিখিবে শুন: ‘সে বলে বিস্তর মিছা, যে বলে বিস্তর! ওঁ!”

চন্দ্রগুপ্ত: “ওঁ!”

চাণক্য: “অর্থাৎ ‘হুম, শুনিলাম, ভাবিয়া দেখিব।’ রাজা কেবল শুনিবে, পারতপক্ষে কিছু বলিবে না। যদি বলিতেই হয়, সময় ও সুযোগমতো বলিবে: ‘ওঁ!’ ইহার বেশি একটি শব্দও নহে। ঈশ্বরও নিরন্তর এই প্রণব-মন্ত্রই উচ্চারণ করিতেছেন। তুমি নিজের জন্যে যত প্রার্থনা, অপরের বিরুদ্ধে যত অভিযোগই কর না কেন, ঈশ্বর শুনিয়া শুধু বলেন: ‘ওঁ!’ রাজাকে কমবেশি ঈশ্বরের মতো হইতে হইবে। ঈশ্বরকে কেহ কখনও কিছু বলিতে শুনিয়াছে? আর যদি বলিতেই হয়, তবে এমনভাবে বলিবে যেন শুনিয়া কেহ বুঝিতে না পারে, তুমি তাহার পক্ষে, নাকি বিপক্ষে বলিতেছ।”

দৃশ্য-৩
[চাণক্যের শয়নকক্ষ। চাণক্য অর্ধশায়িত অব¯’ায় ‘অর্থশাস্ত্র’ পুস্তকের পাতা উল্টাইতেছেন। চন্দ্রগুপ্তের প্রবেশ]

চাণক্য: “চন্দ্রগুপ্ত, রাজনীতির কোন নিয়মে তুমি আমলক গোষ্ঠী ও প্রগতিবাদী গোষ্ঠীকে মুখোমুখি দাঁড় করাইয়া দিলে? কোন নিয়মেই বা তুমি আমলক গোষ্ঠীর পক্ষাবলম্বন করিলে? কোনো অশরীরী বেতাল তোমার মস্তিষ্কের দখল নেয় নাই তো?”

চন্দ্রগুপ্ত: “কেন প্রভু, শম, দান, ভেদ, দণ্ড– এই চার উপায়ে শত্রুধ্বংস করিতে আপনিই তো শিক্ষা দিয়াছেন।”

চাণক্য: “এই চারি উপায়ের মধ্যে ক্রমটি কি একবারও লক্ষ্য করিয়াছ? প্রথমে শম, শমে কাজ না হইলে দান, তাহাতেও কাজ না হইলে ভেদ এবং এই তিনটি উপায়ের কোনোটিতে কাজ না হইলে অগত্যা দণ্ড। তুমি কী করিয়াছ? প্রথমে আমলক গোষ্ঠীকে বহু কোটি টাকা ঘুষ দিয়াছ। তুমি বলিবে, শমে কাজ হয় নাই বলিয়াই দানের পথে গিয়াছি। কিন্তু কাজ হইয়াছিল কি? তোমার শত্রুদের নিকট হইতে আরও বেশি ঘুষ পাইয়া বা ঘুষের আশ্বাসমাত্র পাইয়া তাহারা রাজধানীতে আসিয়া পদ্মচত্বর দখল করিয়া বসিল। তখন তোমার আর উপায় ছিল না। দণ্ড প্রয়োগ করিতে তুমি বাধ্য হইলে। তাহা তুমি বিনা রক্তপাতে করিয়াছিলে বটে। কিন্তু তোমার প্রদত্ত দণ্ডে যাহারা দিশাহারা হইয়া গিয়াছিল, তাহাদের উপর তুমি আবার দান প্রয়োগ করিতেছ কেন?”

চন্দ্রগুপ্ত: “সামনে নির্বাচন-সংগ্রাম প্রভু! ঘুষ না দিলে আমলকেরা যদি উল্টাসিধা বুঝাইয়া সাম্রাজের জনগণের মন বিষাইয়া তোলে?”

চাণক্য: “বুঝিলাম। কিন্তু আমলক এবং প্রগতিবাদী– এই উভয় গোষ্ঠীকে পরস্পরের বিরুদ্ধে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হইবার উসকানি তুমি কেন দিলে! এই দ্বন্দ্বে আহূত হইয়া যাহারা আহত হইবে, তাহাদের চিকিৎসা না দিতেও তুমি নাকি তোমার স্বরাজ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়াছ? এই অদ্ভুত অরাজনৈতিক আচরণ কেন?”

চন্দ্রগুপ্ত: “হাজার দুয়েক বছর পরে ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নামক একটা নিয়ম নাকি গৃহীত হইবে রাজনীতিতে। আমি এখনই সেই নিয়ম প্রয়োগ করিয়াছি।”

চাণক্য: “মহাভুল করিয়াছ। উহা উপনিবেশে ব্যবহার্য রাজনীতি, স্বাধীন দেশে প্রয়োগ করিলে হিতে বিপরীত হইবে। যাহারা মূলত তোমার পক্ষের লোক তাহাদিগের সহিত তোমার চিরশত্রুদের বিবাদ বাঁধানো আপন পদমূলে পরশুক্ষেপনের সামিল।”

চন্দ্রগুপ্ত: “যাহারা আমার সমালোচনায় মুখর হইয়াছে, আমাকে গালি দিতেছে, তাহাদিগকে আমি কেমন করিয়া ‘আমার পক্ষের’ লোক ভাবিব, প্রভু?”

চাণক্য: “যাহারা আসলেই পক্ষের লোক তাহারাই সমালোচনা করে, গালি দেয়। বিপক্ষের লোক অত ঝামেলায় যায় না। তাহারা সুযোগ পাইবামাত্র সরাসরি গলাটি কাটিয়া লয়। কে তোমার পক্ষের লোক আর কে তোমার বিপক্ষের তাহা বিচার করিতে চাও? একবার মাথা ঠাণ্ডা করিয়া ভাবিয়া দেখ, তোমার অবর্তমানে কাহারা বেশি লাভবান হইবে, প্রগতিবাদীরা নাকি আমলকেরা?”

চন্দ্রগুপ্ত: “আমার অবর্তমানে কাহারা বেশি লাভবান হইবে, তাহা জীবিতাবস্থায় কেমন করিয়া জানিব প্রভু?”

চাণক্য: “তোমার পিতা গৌরমিত্র শাক্য মজ্জবও জীবৎকালে কখনও জানিতে চেষ্টা করেন নাই, কে তাহার আপন, কে তাহার পর। একজন রাজার জন্যে এই স্বভাব, এই আচরণ আত্মঘাতের সামিল। তিনি পরীক্ষিত বন্ধু তজদ্দনকে বিতাড়িত করিয়া তাহার প্রতি চির-অসূয়াপরায়ণ ষড়যন্ত্রকারী মৈস্তককে বুকে টানিয়া লইয়াছিলেন। তিনিও আমলকদের শক্ত হাতে দমন করেন নাই, অথচ তাহার সে সুযোগ ছিল! এখন তুমিও একই ভুল করিতে চলিয়াছ। বংশের ধারা যাইবে কোথায়?

“বল দেখি, তোমার মহান পিতার অনুপস্থিতিতে কাহারা লাভবান হইয়াছে? আমলকেরাই নহে কি? প্রগতিবাদীরা কি দশকের পর দশক ধরিয়া মহান শাক্য মজ্জবের হত্যার মাশুল গুনে নাই? শুনিয়াছি, তুমি রন্ধন-পটিয়স। নিজহস্তে আপনার হৃদপিণ্ড কাটিয়া মধুপর্ক রাঁধিয়াও যদি আমলকদের পাতে দাও, তবুও তাহারা জীবন থাকিতে তোমাকে সমর্থন করিবে না। স্বীয় মস্তক আবরণে ঢাকিয়া ও ধর্মপরায়ণতা দেখাইয়া, তমসা দেবীর মূর্তি সরাইয়া কিংবা সাম্রাজ্যের অসহায় নাস্তিকগণের বিরুদ্ধে বরাহমাংস ভক্ষণ ও গঞ্জিকাসেবনের মিথ্যা অপবাদ দিয়া তুমি আমলকদের সন্তুষ্ট করিতে পারিবে না, বরং সাম্রাজ্যের বুদ্ধিমান নাগরিকগণের বিরক্তি ও হতাশা উৎপাদন করিবে।

“সংস্কৃত প্রবাদ স্মরণ কর: ‘অঙ্গার শতধৌতেন মলিনাঞ্চ ন মুচ্যতে’, অর্থাৎ কয়লা শত ধুইলেও ময়লা যায় না। কুক্কুর-পুচ্ছ দ্বাদশ বর্ষ নলের ভিতর রাখিয়া দিলে নল বক্র হইয়া যাইতে পারে, কিন্তু পুচ্ছ কদাপি সরল হইবে না।”

Related Posts

Comments (28)

অসাধারণ!

erectile dysfunction treatment erectile dysfunction drug erectile dysfunction causes

buy brand cialis online https://cileve.com/ cialis online canadian pharmacy

what cialis does https://rcialisgl.com/ – cialis timeline cialis vs cialis professional

http://buyzithromaxinf.com/ – can i buy zithromax at walgreens

https://buyneurontine.com/ – neurontine side effects

Comprare Cialis Generico Line best cialis online

Asymptomatic hyperuricemia a. Qppcyx Plaquenil cialis en precio Rukmbj

viagra gel viagra generic online sildenafil tablets 100mg uk

Variable Control sisters n 1067 Case sisters n 907 Adjusted OR 95 CI Adjusted OR 95 CI No cialis buy Block diagram summarizing some of the purported mechanisms mediating genomic and nongenomic effects of estrogen on vasodilating function in cerebral arteries and arterioles

In conclusion, data achieved from this study revealed that the pre treatment with allicin potentiates the antitumor effect of TAM and protects against its hepatic injury by preventing oxidative stress and lipid peroxidation, enhancing antioxidant enzyme activities and inhibiting hepatic inflammation cialis 20 mg

Leave a comment